বাঘমামার খবর

(((Online যখন আছে.. )))

বন-বাদারে লেজ দুলিয়ে ঘুরে বেড়ানো আমার কাজ। কিন্ত গ্রাম-শহরের টান আমার পিছু ছাড়েনা  । অবশ্য আমার একটা সুবিধা আছে। আমাকে মানুষরা ভয় পায়না। পাবে কি করে? লোকালয়ে তো আমি বাঘরূপী না, ছন্মবেশে ঘুরে বেড়াই। সে এক বিশাল History…
একবার হলো কি..
সুন্দরবনের ঘটনা। আমরা এক বাঘসভা-য় ব্যাস্ত, হঠাৎ হৃদয়বিদারক আত্মচিৎকার ভেসে এলো দূর থেকে। দেখি এক আধলেংটো মানুষকে তাড়া করেছে দুইটা জংলি ছাগল !!! যাই হোক, ছুটে যেয়ে উদ্ধার করলাম ছাগলের গুঁতো থেকে :), সেই থেকে দিব্যি খাতির ফরিং গুরুর সাথে।। হ্যা, এই পাগলা মানুষটার নামই ফরিং গুরু। আমি দলের লিডার “বাঘমামা” হওয়ায় মানুষ জাতির উপর বিরক্ত থাকা অন্য বাঘরাও হয়ত আমার সন্মাণার্থে তাকে কিছুটা ছাড় দিলো। যাই হোক কিছুদিনের মধ্যেই Joly Mind ফরিং গুরুর সাথে জটিল আড্ডা জমে উঠলো। মানুষ জাতি সম্পর্কে যথেষ্ঠ (!) নলেজ থাকার পরও তার কাছে মুগ্ধ হয়ে জানলাম অনেক কিছু, তাদের ভালো-মন্দ দিক, আনন্দ-কষ্ট, রং-ঢং, আরোও কত্ত কি !!! সেই থেকে লোকালয়ের প্রতি দুর্বলতা আমার। গভীর জঙ্গলে ফরিং গুরুর ছোট্ট লাল ট্যাবটায় Full Network!!! তা দিয়ে শেখালো Facebooking  … এতো এক আজব দুনিয়া, পৃথিবীর মধ্যে পৃথিবী।।
এর মাঝে অবাক হয়ে খেয়াল করলাম ফরিং গুরু তন্ত্রে-মন্ত্রে অনেক পটু। সেইদিন পশুর নদীর পারে এক দুষ্টু হাতি তাড়া করেছে বুনো বিড়ালকে। আমরা দূর থেকে দেখছিলাম, বেচারা বিড়াল ভয় পেয়ে ঝাপিয়ে পড়ল নদীতে। হাবুড়ুবু থাওয়া বিড়ালটাকে কি করবো বুঝে ওঠার আগেই গুরু মন্ত্র ছুড়ে দিলো। ওমনি বিড়ালটা মাছ হয়ে তরতর সাতার কেটে নিরাপদ স্থানে গিয়ে আবার বিড়াল হয়ে গেলো!!
এভাবেই সময় পার হয়ে গেল।। একদিন ভোরে দেখি চাট্টিবাট্টি গোল করছে ফরিং গুরু  !! আমার কান্না আর দেখে কে? আমার কান্না দেখে চেলাপেলারাও দেখি চোখ ফুলিয়ে অস্থির।
ফরিং গুরু শান্তনা দিয়ে বলল “দেখা বারবার হবে, ভাবিস না। তুই লোকালয়ে ঘুরতে চাস তার ব্যবস্থা করে যাচ্ছি হাদারাম।” বলে আমাকে কানেকানে একটা মন্ত্র শিখিয়ে দিলো। বলল এটা পড়লে তুই মানুষের রূপ পাবি। তবে কোন ক্ষতি করার বা কথা বলার ক্ষমতা থাকবে না কিন্তু। আমি এতেই খুশি, অন্তত লোকালয়ে উভয়পক্ষ তো ভয়ে থাকবে না।।
আর হ্যা জীবনযাপনের প্রয়োজনে “খাওয়া-পটি-ঘুম আর Facebook এ লাইক-শেয়ার-পোস্ট-কমান্স”এই বেসিক কর্মসাধনের সুবিধা দেয়ায় তো হাতেই স্বর্গ।।
সেই থেকে আমি লোকালয়ে 
তাদের রংবেরং কীর্তিকলাপে আমার অভিজ্ঞতা ভয়াবহ ….
কথা বলতে পারিনা তাতে কি? Online যখন আছে .. শেয়ার হপ্পে মাম্মা।
-কাজী আজিজ